পবিত্র কোরানেআল্লাহ ইরশাদ করেছেন, এবং তোমরা ওয়াদা পালন করবে। ওয়াদা সম্পর্কে তোমাদের কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। [১৭ : ৩৪] আর হাদিসে রাসুলে [স.]-এ বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ওয়াদা রক্ষা করে না; দীন ইসলামে ঐ ব্যক্তির কোনো অংশ নেই। ওয়াদা আরবি শব্দ। যার মানে হচ্ছে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা কিংবা কথা দিয়ে কথা রাখা। সাধারণ দৃষ্টিতে যে কোনো প্রকারের কথা দিয়ে কথা রাখাকে ওয়াদা পালন করা বা প্রতিশ্রুতি রক্ষা বলা হয়। ওয়াদা রক্ষা করার বিষয়টি প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিজীবন থেকে সামাজিক জীবন পর্যন্ত ব্যপ্ত।
জীবনযাপনের প্রতি ক্ষণে ক্ষণে ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি এবং বিভিন্ন ধরনের চুক্তিতে আবদ্ধ হই আমরা। প্রতিটি ক্ষেত্রে এই ওয়াদা বা প্রতিশ্র“তিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আদেশ প্রদান করেছে ইসলাম। একে খাটো করে কিংবা কোনো প্রকার তাচ্ছিল্যের চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিশ্রুতি পালনই মানুষের জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি গুণ। ইহজগতে যারাই স্মরণীয়-বরণীয় হয়ে আছেন, সবাই এই গুণটি সঠিকভাবে পালন করেছেন। ইসলাম মহৎ এই গুণটিকে আখলাকে হামিদা বা উত্তম চরিত্রের অন্যতম গুণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সংসার জীবনে কঠিনতম কাজ এর মধ্যে ওয়াদা পালনই সবচেয়ে কঠিন। এই ওয়াদা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি পালন করতে গিয়ে প্রিয়জন বা নিজের প্রিয়তম বস্তুকে উৎসর্গ করতে হয়।
হজরত রাসুলে পাক [সা.] বলেছেন, প্রতিশ্র“তি করা ঋণস্বরূপ। তিনি আরো বলেছেন, ওয়াদা বা প্রতিজ্ঞা পূরণ করো; এ সম্পর্কে রোজ হাশরে প্রশ্ন করা হবে। কাফের হোক অথবা মুসলমান- উভয় ক্ষেত্রেই ওয়াদা পালন করা অবশ্য কর্তব্য। কেননা প্রতিশ্র“তি বা ওয়াদা পালন করা এমনই এক গুণ যাকে বিকৃত করা যায় না। আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে সূরা তওবায় বলেছেন। তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা বলে যে, আল্লাহপাক যদি আমাকে দেন, আমি অবশ্যই ছদকাহ [দান-খয়রাত] করব এবং প্রকৃত মোমিন হব। অতঃপর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার কৃপায় দান করল। সে তখন কৃপণ হয়ে গেল এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল। মোনাফিকের চিহ্ন হিসেবে নবিজি [সা.] যে কয়টি আলামতের কথা বলেছিলেন ওয়াদা ভঙ্গ করা তার মধ্যে অন্যতম। অতএব আসুন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি, রাজি, খুশি, নৈকট্য অর্জন এর আমরা ওয়াদা বা প্রতিশ্র“তি যথাযথ পালনে সচেষ্ট হই।
এ সম্পর্কিত অনন্যা কিছু জানতে কিলিক করুন